বাগেরহাট সদর উপজেলার কচুয়ায় সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় ভবনটি যে কোন মুহূর্তে ধসে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে। কার্যালয়ের দেয়ালের বিভিন্ন অংশে বড় বড় ফাটল, ছাদ থেকে পলেস্তার খসে পড়ে রড বেড়িয়ে গেছে। এ অবস্থায় ঝুঁকি নিয়েই চলছে সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ের কার্যক্রম। প্রতিদিন কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ জমিজমা সংক্রান্ত কাজে দুই শতাধিক মানুষ যাতায়াত করেন। এর আগে ২০১৩ সালে ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা।
সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয় ঘুরে দেখা যায়, ভবনে ছাদের পলেস্টার খসে ঢালাইয়ের রড বের হয়ে গেছে। কার্যালয়টির দেয়ালে বড় বড় ফাটল। ছাদের বিমেও ফাটল ধরেছে। সিলিং ফ্যানের হুক গুলো মরিচা ধরে নষ্ট। ভবনের অনেক স্থানে মেঝের ঢালাই উঠে গেছে। বিদ্যুৎ লাইনও ঝুঁকিপূর্ণ। বৃষ্টি শুরু হলে টেবিলের ওপর পলিথিন দিয়ে রক্ষা করা হয় প্রয়োজনীয় দলিল-দস্তাবেজ কাগজপত্র। কার্যালয়ের তথ্য মতে জেলা থেকে প্রতি বছর প্রায় শত কোটি টাকা রাজস্ব সরকারী কোষাগারে যায় এই সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলো থেকে।
এখানে কর্মরত নকলনবিশ মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, বৃষ্টির পানি থেকে কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র রক্ষা করার জন্য ভবনের ভেতরের অংশের ছাদে ও ফাইলের ওপর পলিথিন দিয়ে রাখা হয়। ভবনের চারপাশে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ। বাইরে থেকে দেখলে এটাকে পরিত্যক্ত ভবন বলে মনে হয়। সংস্কারের অভাবে ভবনটি এখন ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই কার্যালয়ে প্রবেশের সড়কটি ডুবে যায়।সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের ভেতরেই দলিল লেখকেরাও বসেন।
নকলনবিশ শিল্পী রানী সাহা বলেন , বৃষ্টি হলে ভবনের ভেতরে পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। মেঝেতে পানি থাকায় পা রাখার জন্য আমরা ইট ব্যবহার করি। আর মাথার ওপর পলিথিন তো থাকেই। আমরা অনেক সময় অফিসের কাগজ রক্ষা করতে গিয়ে নিজেরাই ভিজে যাই। কিছু আগেই আমাদের সহকর্মী তার মাথায় পলেস্টার খসে পড়ে মাথা ফেটে গেছে তার পর আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।
দলিল লেখক মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন , ভবনটির অবস্থা খুবই নাজুক। যে কোন মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে। বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আগেই দ্রুত মেরামত করা উচিত।
সেবা নিতে আসা কচুয়া উপজেলার খলিসাখালী ইউনিয়নের সালমা বেগম বলেন ,জমি ক্রয়ের দলিল করতে রেজিস্ট্রি অফিসে আসতে হয়। ভবনের ভেতরে বেশিক্ষণ থাকলে ভয় লাগে। অনেক দিন ধরে রেজিস্ট্রি অফিসের এ অবস্থা। দেখে মনে হয় এই বুঝি পলেস্টার খসে পড়ল।
কচুয়া উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার তুপা বসু বলেন, পরিত্যক্ত এবং ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনটিতে আমরা ১৪ জন কর্মচারী চরম ঝুঁকি নিয়ে সরকারি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে যোগদানের পর থেকে আমি জেলা রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে নতুন ভাবে ভবন নির্মানের জন্য লিখিতভাবে জানিয়েছি।
বাগেরহাট জেলা রেজিস্ট্রার মো. রুহুল কুদ্দুস বলেন, জেলার প্রায় সবগুলো উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ঝুকিপূর্ন অবস্থায় কার্যক্রম চলছে। তবে সাব -রেজিস্ট্রার ভবনের প্রতিকারের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছে। আশাকরি এ সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।