বন বিভাগের কাছ থেকে অনুমতিপত্র নিয়ে পশ্চিম সুন্দরবনের মৌয়ালরা মধু সংগ্রহ শুরু করেছেন।
সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুরে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের কলাগাছিয়া এলাকায় মধু আহরণের মধ্য দিয়ে মধু মৌসুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে।
পশ্চিম বন বিভাগের বুড়িগোয়ালিনী বন অফিস সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে মৌয়ালদের প্রশিক্ষণের পর মধু আহরণের অনুমতিপত্র (পাস) দেওয়া হয়। পাস নিয়ে গভীর বনে মধু সংগ্রহের খোঁজে যেতে শুরু করেছেন মৌয়ালরা।
মধু সংগ্রহের উদ্বোধন ও মৌয়ালদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিসেস খালেদা আইয়ুব ডলি, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী নজরুল ইসলাম, কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম, রমজাননগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আল মামুন, শ্যামনগর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) এম কে এম ইকবাল হোছাইন চৌধুরী
জানা যায়, এ বছর পশ্চিম সুন্দরবনে ১ হাজার ৫০০ কুইন্টাল বা ১ লাখ ৫০০ কেজি মধু ও ৪৫০ কুইন্টাল বা ৪৫ হাজার কেজি মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা রেঞ্জের লক্ষ্যমাত্রা ৯৫০ কুইন্টাল বা ৯৫ হাজার কেজি মধু ও ২৮৬ কুইন্টাল বা ২৮ হাজার ৬০০ মোম।
বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের তথ্য মতে, ২০২২ সালে ৪১১টি পাস নিয়ে ২ হাজার ৮৯৮ জন মৌয়াল ১ হাজার ৪৪৯ কুইন্টাল মধু এবং ৩৩৪ দশমিক ৭০ কুইন্টাল মোম আহরণ করেন। এ থেকে রাজস্ব আয় হয় ৩২ লাখ ৭৪ হাজার ৭০০ টাকা।
২০২৩ সালে ৩৬৫টি পাস নিয়ে ২ হাজার ৪৫০ জন মৌয়াল সুন্দরবনের মধু আহরণে যায়। তাঁরা সে বছর সুন্দরবন থেকে ১ হাজার ২২৫ কুইন্টাল মধু ও ৩৬৭ দশমিক পাঁচ কুইন্টাল মোম আহরণ করেন। এ থেকে রাজস্ব আয় হয় ২৭ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা।
জানা গেছে, ১৮৬০ সাল থেকে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় ১৮৮৬ সাল থেকে সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জে অনুষ্ঠান করে প্রতিবছর ১ এপ্রিল মধু সংগ্রহ শুরু হয়। বন সংলগ্ন একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠী বংশ পরম্পরায় মধু সংগ্রহ করে। এদের মৌয়াল বলা হয়।