ভোমরা শুল্ক স্টেশনের ডেপুটি কমিশনারের অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিকারের লক্ষে যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় ভোমরা সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ অংশ নেন। সভায় ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত ডেপুটি কমিশনারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে আলোচনা শেষে এনবিআর এর চেয়ারম্যান ও খুলনা কাস্টমস’র কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
সভায় জানানো হয়, আমদানিকৃত ভারতীয় ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ পর বি/ই এন্ট্রি করার জন্য কাস্টমসে অগ্রিম ২ হাজার টাকা না দেওয়া পর্যন্ত বি/ই নাম্বার ফেলতে দেওয়া হয়না। পণ্য ভেদে অতিরিক্ত হলুদের ক্ষেত্রে ২ হাজার টাকা (ট্রাক প্রতি), শুকনা মরিচের ক্ষেত্রে ৩ হাজার টাকা (বি/ই প্রতি), থৈল সাপটার ক্ষেত্রে ১৫ হাজার টাকা (প্রতি ১০০ মে. টনে), ভূষির ক্ষেত্রে ৫ হাজার টাকা (বি/ই প্রতি), ভুষি সাপটার ক্ষেত্রে ৩০ হাজার টাকা (প্রতি ১০০ মে. টনে), সিরামিক পণ্যের ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা (বি/ই প্রতি পরিক্ষরে ভয় দেখিয়ে) এবং পিয়াজের ক্ষেত্রে ২শ টাকা (ট্রাক প্রতি) জোর পূর্বক আদায় করা হচ্ছে। ভারতীয় ট্রাক বন্দর থেকে বের করার জন্য প্রতিদিন প্রায় ৪০টির অধিক স্টাম্প করতে হয়। স্টাম্প প্রতি ডেপুটি কমিশনারকে নগদ ২ হাজার টাকা এবং পরিক্ষনে দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে ৫০০ শত টাকা প্রদান না করা পর্যন্ত স্টাম্পে সই করেন না। রপ্তানীকৃত পন্যের ক্ষেত্রেও বি/ই প্রতি অগ্রিম ১ হাজার টাকা প্রদান না করিলে বি/ই নাম্বার ফেলতে দেওয়া হয় না এবং পন্যের ডলার মূল্য বাড়ানোর ভয় দেখিয়ে বি/ই প্রতি ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা অবৈধভাবে আদায় করছে।
বক্তারা আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যেখানে রপ্তানি জন্য উৎসাহীত করেছেন সেখানে তিনি ভোমরা দিয়ে কেন রপ্তানি বাড়াচ্ছে তা ক্ষতিয়ে দেখার নামে বিভিন্নভাবে হয়রানি এবং ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। বি/ই সংখ্যা বৃদ্ধি করে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য পাথরের ক্ষেত্রে ১০ ট্রাকে ১টি এবং অন্যান্য পন্যের ক্ষেত্রে ০৫ ট্রাকে ১টি বি/ই নির্ধারণ করে দিয়েছে, যাহা ১৯৯৬ সাল থেকে এই পর্যন্ত কখনো পরিলক্ষিত হয়নি।
এই বিষয়ে ডিপুটি কমিশনারের কাছে সাংবাদিকরা বিভিন্ন অনিয়মের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভালো করে লিখে দেবেন পত্রিকা গুলো আমার কাছে পাঠাবেন আমি সুন্দর করে মনোযোগ সহকারে পড়ে দেখব, যে আপনারা কেমন এই বিষয়ে লিখেছেন। এবং তিনি বলেন আমার স্ত্রী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে চাকরি করে আমার আত্মীয়স্বজন সচিবালয়ে বড় বড় জায়গায় আছে আমার হাত অনেক লম্বা আমার কেউ কিছু করতে পারবেনা। আমি যেটা করবো সেটাই সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি।
ডিসি সাহেবের নির্দেশের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা রাজিব হোসেন এই সমস্ত কর্মকাণ্ড এবং টাকা পয়সা সমস্ত কিছু ডিলিংস করেন বলে জানা যায়। টাকা না দিলে তিনি ডিসি সাহেবকে বা বিভিন্ন মাঠে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেন না এবং ফাইল ছাড়িদেন না। তিনি বিভিন্নভাবে ব্যবসায়ীদেরকে হয়রানি করেন এবং সিরামিকসের প্রতি একটনে সাফটা ২৫০ টাকা এবং প্রতি ১০০ টনে ২৫ হাজার টাকা করে না দিলে তিনি সাফটা দেন না । যেটা সরকারি সুবিধা তিনি অবৈধভাবে জোর করে এই টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ করেন ব্যবসায়ী।
সি এন্ড এফ ব্যবসায়ীরা আরও জানান, এ সকল বিষয়ে ডেপুটি কমিশনারের নিকট জানতে চাওয়া হলে সবকিছু কমিশনার এর নির্দেশে হচ্ছে বলে তিনি আমাদেরকে অবহিত করেন এবং বেশি প্রশ্ন করলে সি এন্ড এফ লাইসেন্স খেয়ে দিবেন বলে হুমকি প্রদান করেন।
এই সকল অথিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়ে সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা রাজীবের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ডিপুটি কমিশনারের যা নির্দেশ আছে এই ভাবেই আমরা কাজ করছি বেশি কথা এবং প্রশ্ন করলে সি এন্ড এফ লাইসেন্স বন্ধ করে দিবো। অবৈধ টাকা আদায় এবং ডেপুটি কমিশনারের অনিয়ম বন্ধ করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করার দাবী জানান সি এন্ড এফ ব্যবসায়ীরা। চলবে……!!!