রাজধানীর মতিঝিলে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ১৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় তিন পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেফতার করেছে মতিঝিল থানা পুলিশ। গ্রেফতার পুলিশ সদস্যরা হলেন: মো. কামরুল ইসলাম (৩৫), রাফিজ খান (২৬) ও তুষার ইমরান (৩১)।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) সময় সংবাদকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মতিঝিল জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল হাসান। তিনি জানান, গ্রেফতারের পর তাদের আদালতে তোলা হয়। আদালত তাদের দুদিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
গ্রেফতারদের মধ্যে কামরুল অর্থ সংক্রান্ত একটি মামলায় পুলিশের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন। রাফিজ ও তুষার রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে নিয়োজিত ছিলেন।
ডিএমপির মতিঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাসেল হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সিআইডি পরিচয়ে ১৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়ার পর মতিঝিল এলাকার প্রতিটি জায়গার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে সেগুলো পর্যালোচনা করা হয়। বিভিন্ন স্পটের প্রায় ৫০টি ফুটেজ পর্যালোচনা করে আসামিদের শনাক্ত করা হয়। এ ছিনতাইয়ের পরিকল্পনাকারী কামরুল ইসলাম আরও আগে থেকে সাময়িক বরখাস্ত ছিলেন।
তিনি বলেন, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্য পরিচয় দিয়ে গত ১২ অক্টোবর মতিঝিল এলাকা থেকে তিনজনের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় এই তিন পুলিশ সদস্য জড়িত ছিলেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ওই ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। পরে গত ২১ অক্টোবর অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। আদালতের অনুমতিতে তাদের দুদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১২ অক্টোবর বিকেল ৩টার পর রাজধানীর মতিঝিলের হেরিটেজ অ্যাসেটসের অফিস সহকারী সুমন মিয়াসহ তিন কর্মচারী মতিঝিলের ওই মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান থেকে ৩০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। সেই টাকা নিয়ে রিকশায় তারা তাদের অফিসের (মতিঝিল) দিকে রওনা হন। রিকশা অফিসের কাছাকাছি আসতেই তিন-চারজন ব্যক্তি নিজেদের সিআইডি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাদের পথরোধ করেন।
কথা বলার একপর্যায়ে অফিস সহকারী সুমন পালিয়ে যান। তখন হেরিটেজ অ্যাসেটসের অপর দুই কর্মচারী মোয়াজ্জেম ও হৃদয়কে রিকশায় করে মতিঝিলের শাপলা চত্বরের দিকে নিয়ে যান ওই ব্যক্তিরা। পরে সেখান থেকে তাদের নেয়া হয় কমলাপুর রেল স্টেশনে। সেখান থেকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে প্রথমে কমলাপুরের টিটিপাড়া এলাকায় এবং পরে খিলগাঁও চৌরাস্তা মসজিদ এলাকায় নিয়ে মোয়াজ্জেম ও হৃদয়ের কাছে থাকা নগদ ১৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেন তারা।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ১৫ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার পর মোয়াজ্জেম ও হৃদয়কে অন্য একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তুলে দেন আসামিরা। এ সময় তাদের বলা হয়: ‘তোরা পেছন দিকে তাকাবি না, তাকালে গুলি করে দেব।’