সাতক্ষীরার শ্যামনগরে কোনরকমে ও যেনতেনভাবে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ দিবস পালিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে গত তিন মার্চ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ দিবস হওয়া সত্ত্বেও সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগ রোববার ৫ মার্চ দিবসটি পালন করে। এদিকে গুরুত্বপূর্ণ দিবসটি পালন অনুষ্ঠানে বনবিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারী কয়েকজন সংবাদকর্মী ও সিজিপি সদস্যরা ছাড়া জনপ্রতিনিধি এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ না থাকায় বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার তৈরি হয়েছে। রোববার বেলা ১১ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগালিনে স্টেশন অফিসে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ দিবস ২০২৩ এর ঐ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সাতক্ষীরা রেঞ্জের
সহকারী বন সংরক্ষক ইকবাল হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ডাঃ আবু নাছের মহসিন হোসেন। আলোচনা সভায় টানিয়ে দেওয়া ব্যানারে বিশেষ অতিথি হিসেবে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নাম দেওয়া হলেও অসুস্থতা জনিত কারণে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন বলে কর্তৃপক্ষের পক্ষে জানানো হয়। এছাড়া নওয়াবেকি মহাবিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক নূর মোহাম্মদ বুলবুল উক্ত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
এদিকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি না থাকায় বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা সময়ে বসবাসরত জনগোষ্ঠী তাদের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ ছাড়া এ ধরনের একটি অনুষ্ঠান অনেকাংশে অসম্পূর্ণ। নামকাওয়াস্তে যেনতেনভাবে নির্দিষ্ট দিনের দুদিন পর কোন রকমে ফটোসেশনের জন্য আলোচনা অনুষ্ঠান করেই কর্তৃপক্ষ নিজেদের দায় সেরেছে বলে তারা অভিযোগ তোলেন।
নীল ডুমুর গ্রামের মোঃ সফেদ আলী জানান বংশ পরম্পরায় আমরা সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল। মাছ কাঁকড়া ধরার পাশাপাশি সুন্দরবনের প্রাণী সংরক্ষণে সবসময় আমরা বনবিভাগের সহায়তা করি। অথচ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ দিবসের অনুষ্ঠান সম্পর্কে বিশেষ কোনো তথ্য না থাকায় আমরা আলোচনা অনুষ্ঠানে হাজির হতে পারিনি। চনকুড়ি গ্রামের বিশ্বনাথ মন্ডল বলেন মুষ্টিমেয় বধবিভাগের কর্মী এবং সিজিপি কর্মীদের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের চেষ্টা সফল হবে না। বনবিভাগের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মচারী ও সিজিপিএ এর অনেক সদস্য সরাসরি বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচারের সাথে জড়িত। আর তাই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করতে হলে এই অভিযানে স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করার বিকল্প নাই। অথচ জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে এ ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়ায় বনবিভাগের দায় রয়েছে।
এদিকে সিনিয়র সাংবাদিক আবুল হোসেনসহ স্থানীয়রা গ্রামবাসী জানান বন্য প্রাণী সংরক্ষণ দিবস ছিল গত তিন মার্চ। কিন্তু নির্দিষ্ট দিনে অনুষ্ঠান না করে কর্তৃপক্ষ দুদিন পর দায়সারাভাবে দিবসটি পালন করেছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ করে অনুষ্ঠানে উপস্থাপকের দায়িত্ব পালন করা বন বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন ৩ তারিখ শুক্রবার হওয়ায় সেদিন সকলের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা ছিল। বাধ্য হয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দিবসটি তিন মাসের পরিবর্তে পাঁচ মাস পালন করা হলো।