শ্যামনগরে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে। জানাগেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ীবাঁধের ব্লক তৈরির জন্য জায়কা প্রকল্পের কাজটি গ্রহণ করেন মেসার্স আররাদ কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠানের মালিক সবুজ খান। স্বরেজমিনে দেখা গেছে উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের ভামিয়া এলাকায় প্রায় সাড়ে ৩ একর জমিতে সুন্দরবন পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকার নদী ভাঙ্গন এলাকা থেকে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে স্তুপ করছেন ড্রেজার মালিক ফারুক হোসেন। তিনি বলেন আামরা জেলা প্রশাসকের অনুমোদন নিয়ে বালু উত্তোলন করছি। অনুমোদনে বলা আছে বিবেচনা করে বৈজ্ঞানিক উপায়ে ড্রেজিং এর মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে, বালু উত্তোলনের জন্য শ্যামনগর উপজেলা সরকারি কমিশনার (ভূমি),ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সুপারিশ করেছেন। এ ছাড়া শুধু মাত্র উন্নয়ন মূলক কাজের জন্য যতটুকু বালুর প্রয়োজন, ততটুকু বালু উত্তোলন সহ প্রস্তাবিত স্থান থেকে প্রথমে বালু উত্তোলনের পর জরিপ করে পরিবেশ ও নদীর গতিপথ ঠিক থাকে এবং নদীর আপস্ট্রিম ও ডাউনস্ট্রিমে কোন ক্ষতি সাধন না হয় সে বিষয়গুলো বিবেচনা পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ ও তদারকিসহ প্রতিবেদন প্রেরণ করার জন্য বলা হয়েছে। এ বিষয়ে শ্যামনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আসাদুজ্জামান এর মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি বলেন জেলা প্রশাসক বালু উত্তোলনের অনুভূতি দিয়েছেন। সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) মোঃ মহিউদ্দীন মহোদয়ের সাথে মুঠো ফোনে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি)’ এর নিকট প্রতিবেদন চাইলে তারা বৈজ্ঞানিক উপায়ে ট্রেজিং এর মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার সাপেক্ষে বালি উত্তোলনের প্রতিবেদন দেওয়ার মাধ্যমে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সাতক্ষীরা পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সদ্দার শফিকুল ইসলাম বলেন পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ছাড়পত্র দেওয়া হয় না। আমরা বুড়িগোয়ালিনী এলাকায় কোন ছাড়পত্র দেই নাই। পরিবেশ অধিদপ্তরের মতে সুন্দরবন সংলগ্ন ৫২ ইউনিয়নকে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। শ্যামনগর উপজেলার বাবুরা পদ্মপুকুর বুড়িগোয়ালিনী ও আটুলিয়া উল্লেখযোগ্য। সুন্দরবন রিজার্ভ ফরেস্টের বাইরে চারিদিকে ১০ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ এলাকা পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা। সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় কয়েকজন সুধীজন জানান, দরখাস্তের পরিপ্রেক্ষিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক প্রতিবেদন চাইলে শ্যামনগর পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা ও উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি বালু উত্তোলনকারীদের সাথে জোক সাঁজসে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকার কথা গোপন করে বালু উত্তোলনের কোন অসুবিধা নেই মর্মে প্রতিবেদন দিয়েছেন। বালু মহল ও মাটি ব্যবস্থাপন আইন ২০১০ সনের ৬২ নং আইনের ৫ নং কলামে বলা হয়েছে, পাষ্প বা ড্রেজিং বা অন্য কোন মাধ্যমে নদী বা ভূ গর্ভস্থ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাইবে না এবং ১১ নং কলামে বলা হয়েছে সংকটাপন্ন এলাকা হইতে বালু বা মাটি উত্তোলনেে রাজস্ব আদায় নিষিদ্ধ। এছাড়া বালু মহাল ইজারা ব্যতীত কোন স্থান থেকে বালু বা বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না এমনকি রাজস্ব আদায় নিষিদ্ধ। এ ঘটনায় শ্যামনগরের সুধীমহল ভূমি ও বন মন্ত্রণালয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।