জাতীয় পার্টির সব পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া মসিউর রহমান রাঙ্গার কুশপুত্তলিকা দাহ করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় পার্টি মহানগর উত্তরের আয়োজনে প্রতিবাদসভা ও বিক্ষোভ মিছিলের পর নেতাকর্মীরা মসিউর রহমান রাঙ্গার কুশপুত্তলিকায় জুতাপেটা ও পদদলিত করে আগুন ধরিয়ে দেন।
এর আগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে জাতীয় পার্টি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে জড়ো হন। এ সময় তারা মসিউর রহমান রাঙ্গার ‘আপত্তিকর, কুরুচিপূর্ণ ও অমার্জিত’ বক্তৃতার জন্য তাকে প্রতিহত করার স্লোগান দেন।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক সফিকুল ইসলাম সেন্টুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা মসিউর রহমান রাঙ্গাকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেন।
তারা বলেন, যেখানেই মসিউর রহমান রাঙ্গা, সেখানেই প্রতিহত করা হবে তাকে। রাস্তা থেকে তুলে এনে রাঙ্গাকে এমপি-মন্ত্রী বানিয়েছেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। কিন্তু ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য আজীবন মসিউর রহমান রাঙ্গা সরকারের দালালি করতে গিয়ে জাতীয় পার্টির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। যারা জাতীয় পার্টির সঙ্গে বেইমানি করেছেন, সবাই ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন। মসিউর রহমান রাঙ্গাও ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হলো। জাতীয় পার্টির সঙ্গে বেইমানি করে রংপুরেও ঘৃ্ণার পাত্রে পরিণত হয়েছেন রাঙ্গা।
নেতাকর্মীরা বক্তৃতায় আরও বলেন, রাঙ্গার মতো যারাই দালালি করবে, তারাই রাজপথে গণধোলাই খাবেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব সাহিদুর রহমান টেপা বলেন, যখনই জাতীয় পার্টি ঘুরে দাঁড়ায়, তখনই জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি এখন দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে কথা বলছেন। জাতীয় পার্টি দেশের মানুষের আস্থা অর্জন করেছে। এ কারণেই একটি কুচক্রি মহল জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। যারা দালালি করবে, জাতীয় পার্টিতে তাদের জায়গা হবে না। জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা কারও ষড়যন্ত্রে বিভ্রান্ত হবে না।
সভাপতির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক সফিকুল ইসলাম সেন্টু বলেন, মসিউর রহমান রাঙ্গাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। রাঙ্গা প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে তাকে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, মসিউর রহমান রাঙ্গা যে ভাষায় বক্তৃতা করেছেন তা আমাদের রুচিতে বাধে। কিন্তু জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা নোংরামির জবাব দিতে জানে। জাতীয় পার্টিতে থেকে কেউ দালালি করলে সে কখনোই ক্ষমা পাবে না। তিনি বলেন, জনবন্ধু জিএম কাদেরের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা এখন ঐক্যবদ্ধ। ষড়যন্ত্রকারীরা ব্যর্থ হয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হবে।
প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, নাজমা আখতার এমপি, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহবুব আলম লিপটন, ভাইস চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান খান, শফিকুল ইসলাম শফিক, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, মো. বেলাল হোসেন, একেএম আশরাফুজ্জামান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন, সম্পাদকমণ্ডলী আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, মিজানুর রহমান মিরু, যুগ্ম সম্পাদক মীর শামসুল আলম লিপটন, বিভিন্ন থানা থেকে বক্তব্য রাখেন মো. মাহফুজ মোল্লা, মেহেদী হাসান শিপন, শওকত হোসেন দুলাল, আলাল, আলাল মেম্বর, এসএম হাশেম, ড. নাসির উদ্দিন বকুল, চিশতি খায়রুল আবরার, জাতীয় ছাত্রসমাজেরর নেতা নাজমুল হাসান রেজা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আমানত হোসেন আমানত, সরদার শাহজাহান, হারুণ অর রশীদ, হেনা খান পন্নি, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন সরকার, মাখন সরকার, মিজানুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক-২ এমএ রাজ্জাক খান, যুগ্ম সম্পাদক সরদার বাদল, আজহারুল ইসলাম সরকার, মাহমুদ আলম, দ্বীন ইসলাম শেখ, শাহনাজ পারভীন, কেন্দ্রীয় নেতা শেখ মো. সরোয়ার হোসেন, আঞ্জু বেগম, জাকির হোসেন খান, আব্দুর রহিম, রমজান আলী ভূঁইয়া, তাসলিমা আকবর রুনা, মিনি খান, মিথিলা রওয়াজা, সৈয়দা মেহেরুন্নেসা খান হিয়া, জিয়াউর রহমান বিপুল, আসলাম, আবুল বাশার, আসমা আক্তার রুমি, মো. হাবিবুর রহমান, এনএম সেলিম, জাতীয় ছাত্রসমাজের সভাপতি ইব্রাহীম খান জুয়েল।