সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালি এসআর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাসারের আত্মহত্যার ঘটনার যথাযথ তদন্ত ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলায় আসামীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে শ্যামনগর শিক্ষক সমিতির শোক র্যালি ও মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে।
বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি ও মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি শ্যামনগর শাখা আয়োজনে কয়েক শত শিক্ষক শিক্ষিকার সমন্বয়ে শনিবার বিকেল চারটায় নকিপুর সরকারি হরিচরণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বর থেকে একটি শোক র্যালি বের হয়ে র্যালিটি উপজেলা সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শ্যামনগর প্রেসক্লাবে যেয়ে শেষ হয়।
শ্যামনগর প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসুচিতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিক্ষক কল্যাণ সমিতির শ্যামনগর শাখার সভাপতি জয়দেব বিশ্বাস, শ্যামনগর মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি কৃষ্ণনন্দ মুখার্জী,সাধারণ সম্পাদক আজিয়ার রহমান, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি কালিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, উপজেলা কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি আল মেহেদী লিটন, নকিপুর সরকারি হরিচরণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ড. আব্দুল মান্নান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি পরিমল কর্মকার, মৃতের বড় ছেলে মেহেদী প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গত বছর কৈখালি এসআর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চারজন কর্মচারি নিয়োগকে কেন্দ্র করে ওই বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের বর্তমান সভাপতি কৈখালি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহিমসহ তিনজন অভিভাবক সদস্য ও তিনজন শিক্ষক পরিকল্পিতভাবে প্রধান শিক্ষক আবুল বাসারকে অপবাদ দিয়ে ও তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের চেষ্টা ও টাকা আত্মসাতের মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছিল। সর্বোপরি ওই চক্রটি বিরোধ মীমাংসার নামে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। আদায় করে ৫ লাখ টাকা। এরপরও মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে পড়া প্রধান শিক্ষককে ছুটি মঞ্জুর না করে তাকে ২ জানুয়ারি কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকুরিচ্যুত করার হুমকি দেন সভাপতি আব্দুর রহিম।
একপর্যায়ে মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে প্রধান শিক্ষক আবুল বাসার তার গোপালপুরের ভাড়া বাসার সামনে গত ৪ জানুয়ারি আম গাছে ঝুলে আত্মহত্যা করতেত বাধ্য হন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী নুরুন্নাহার পারভিন বাদি হয়ে ওই রাতেই সভাপতি আব্দুর রহিমসহ সাতজনের নাম উলেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন। দুর্ভাগ্য গত চার দিনেও পুলিশ কোন আসামীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আবুল বাসারের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের আগামি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার ও মৃত্যুর ঘটনায় যথাযথ তদন্তত করতে হবে। তা না হলে পরবর্তীতে বৃহত্তর কর্মসুচি গ্রহণ করা হবে। এছারাও তারা বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী এবং মাধমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক রেজাউল করিম জানান, আসামীরা এলাকার বাইরে অবস্থান করায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।