প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশ উপেক্ষা করে গোপালপুর উপজেলার সূতি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় প্রান্তিকের মূল্যায়ন পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ফি আদায় করার গুরুতর অভিযোগ মিলেছে। অথচ পরীক্ষাসংক্রান্ত খরচ চালানোর জন্য ওই বিদ্যালয়ে স্লিপখাতে ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা অফিস ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুননাহারকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে।
জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত ২৭ নভেম্বর এক নির্দেশক্রমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২০২২ শিক্ষা বর্ষের তৃতীয় প্রান্তিক পরীক্ষায় (সমাপনী) কোনভাবেই শিক্ষার্থী অথবা তার অভিভাবকের নিকট থেকে ফি আদায় করা যাবেনা মর্মে সাবধান করে দেয়া হয়। কিন্তু এক শ্রেণির শিক্ষক পরীক্ষার্থীদের নিকট থেকে শ্রেণিভেদে ৩০ থেকে ৭০ টাকা হারে বাধ্যতামূলকভাবে ফি আদায় করেছে। তৃতীয় প্রান্তিকের এ পরীক্ষায় উপজেলার প্রায় সাড়ে চার হাজার পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের মত উপজেলার প্রায় বিদ্যালয়েই পরীক্ষার ফি নেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলার সূতি ক্লাস্টারে দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারি শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, সূতি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুননাহার স্কুলের তিনশতাধিক শিক্ষার্থীর নিকট থেকে বাধ্যতামূলকভাবে ফি আদায় করেছেন বলে অভিযোগ উঠে। দু’দিন আগে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সাথে ওই স্কুল পরিদর্শনকালে অভিযোগের সত্যতা মিলে। উপজেলা শিক্ষা অফিসার মফিজুর রহমান জিন্না অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে জানান, ওই বিদ্যালয়ের পরীক্ষাসংক্রান্ত খরচ চালানোর জন্য স্লিপখাতে ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সে টাকা নিজের হাতে রেখে ওই প্রধান শিক্ষক পরীক্ষার্থীদের নিকট থেকে বাধ্যতামূলক ফি আদায় করেছেন বলে জানা গেছে। এজন্য গত সোমবার তাকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়েছে।
স্কুলের অভিভাবক সদস্য সোহেল হোসেন জানান, এ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এলাকার দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির শিশুরা। তাদের নিকট থেকে বাধ্যতামূলক ফি আদায় করায় অনেক শিশুর পরীক্ষায় অংশগ্রহন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার পারভেজ মল্লিক জানান, মঙ্গলবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের এক সভায় ফি আদায়ের ওই বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা করা হয়। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।
প্রধান শিক্ষক আজিজুন নাহার জানান, তৃতীয় প্রান্তিক নয়, সাপ্তাহিক পরীক্ষার জন্য এসব ফি তোলা হয়। শিক্ষা অফিসের আপত্তি থাকলে ওই টাকা ফেরত দেয়া হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত হবে। অভিযোগের সত্যতা মিললে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সুপারিশ করা হবে।