আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি আগুনের খেলা খেলছে। আন্দোলনের নামে নাশকতা করছে বিএনপি। আন্দোলনের নামে তারা পুলিশের উপর হামলা করছে, জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা সরকারি বিআরটিসি বাস পুড়িয়ে দিচ্ছে। তিনি ৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরপুরের শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্কে আয়োজিত জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওইসব কথা বলেন। তিনি বলেন, বিএনপিকে বিশ্বাস করা যায় না। আপনারা শেরপুরের মানুষ কি তাদের বিশ্বাস করেন? তখন সম্মেলনে উপস্থিত জনতা সমস্বরে হাত তুলে না-সূচক জবাব দেন।
কাদের বলেন, খেলা হবে, বিএনপির বিরুদ্ধে, খেলা হবে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে, খেলা হবে লুটপাটের বিরুদ্ধে, খেলা হবে ভোট চুরির বিরুদ্ধে। খেলা হবেই। আমরা অনেক সহ্য করেছি। দেয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে। শেরপুরের জনগণ প্রস্তুত হয়ে যান। তাদের প্রতিরোধ করতে হবে। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আজ থেকে প্রতিটি গ্রামে, ইউনিয়নে, উপজেলা, জেলা শহরে সর্তক থাকতে হবে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছি। আগামীতে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। তিনি বলেন, কোন অবস্থাতেই বাংলাদেশে আর তত্বাবধায়ক সরকার আসবে না। জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারতসহ বিশ্বের সব উন্নত দেশেই যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, তাদের অধীনেই নির্বাচন হয়। কাজেই বাংলাদেশেও নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সরকার তাতে সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করলে প্রগতিশীল দল হিসেবে আওয়ামী লীগ তা প্রতিহত করবে। আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিটি জেলায় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় শেরপুরে এ সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আরও শাণিত করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুইপ আতিউর রহমান আতিকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, সদস্য মারুফা আক্তার পপি ও রেমন্ড আরেং, শেরপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য একেএম ফজলুল হক চাঁন, সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট ফাতেমাতুজ্জহুরা শ্যামলীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে সাংগঠনিক রিপোর্ট ও শোক প্রস্তাব পাঠ করেন জেলা আওয়ামী লীগের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল। সম্মেলনে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী রঙবেরঙের গেঞ্জি ও ক্যাপ পরে সম্মেলনস্থলে উপস্থিত হন।
পরে সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে দ্বিতীয় অধিবেশনে নতুন কমিটি ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। এতে তৃতীয়বারের মতো জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক এমপি। আর সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছানুয়ার হোসেন ছানু। এছাড়া সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট চন্দন কুমার পালকে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ১৯ মে জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলনে সদর আসনের এমপি হুইপ আতিউর রহমান আতিককে সভাপতি এবং এ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পালকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়।