চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে, সচিবালয়ের সামনে সহিংসতা ও উপদেষ্টাদের অবরুদ্ধ করে রাখাসহ বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় আনসার সদস্যরা। আহত হয় শতাধিক শিক্ষার্থী। এঘটনায় পল্টন, শাহবাগ, রমনা ও বিমানবন্দর থানায় চারটি মামলা হয়। আসামি করা হয় ৪২৬ জনের মধ্যে ৩৭৫ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। বাকিরা পলাতক। (সোমবার, ২৬ আগস্ট) ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত এ নির্দেশ দেন।
চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে শাহবাগে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন আনসার সদস্যরা। সেই আন্দোলনের রূপ হঠাৎই পাল্টে যায়। দাবি পূরণে শাহবাগ ছেড়ে সচিবালয় ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি দেয় আনসার সদস্যরা।
গতকাল (রোববার, ২৫ আগস্ট) বিকেলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ তিন উপদেষ্টার সঙ্গে তাদের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক করে। সেখানে তাদের বিশ্রাম প্রথা বাতিলসহ কয়েকটি দাবি মেনে নেয়া হয়। এরপর আনসার সদস্যদের একটি অংশ আন্দোলন স্থগিত করলেও আরেকটি অংশ চাকরি জাতীয়করণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে সচিবালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের, অবরুদ্ধ করা হয় চার উপদেষ্টাসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদেরও।
এরপর আটকে পড়া উপদেষ্টা ও সমন্বয়কদের মুক্ত করতে সচিবালয়ের দিকে আসে বিক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। পরে আনসার সদস্যরাও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। আহত হয় অন্তত চার সেনা সদস্যসহ শতাধিক শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় সোমবার রাজধানীর শাহবাগ, পল্টন, রমনা ও বিমানবন্দর থানায় বেআইনিভাবে সমাবেশ ও পুলিশের কাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের হয় ৪২৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও পাঁচ থেকে আট হাজার আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার করা ৩৭৫ জনকে আদালতে তোলা হলে সবাইকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, ‘ভাঙচুর এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজে বাঁধা, গাড়ি ভাঙচুর ও বিভিন্ন কারণে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন আনসাররা এই নাশকতা ঘটনার সাথে জড়িত। অতএব তাদের জেলখানায় পাঠানো হোক। তার বক্তব্য শোনার পর আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণ করেন।’
এদিকে, কোনো নাশকতা বা কাউকে আহত করার উদ্দেশ্যে নয়, আনসার সদস্যরা ন্যায্য দাবি নিয়েই আন্দোলন করছিলেন বলেন দাবি করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীর। এসময় তিনি আসামির জামিন চান।
আসামি পক্ষের আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহিন বলেন, ‘আমরা আদালতকে বলেছি, তাদের ন্যায্য দাবির জন্য তারা আন্দোলন করেছে। তাদের দাবি পূরণ না করে তাদের মামল দিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।’
আনসার সদস্যদের আদালতে নিয়ে আসার খবর পেয়ে তাদের স্বজনরা ভিড় করেন আদালত প্রাঙ্গণে।
এদিন আদাবর থানায় গার্মেন্টস কর্মী হত্যা মামলা আদালতে তোলা হয় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ ও সাংবাদিক ফারজানা রুপা ও শাকিল আহমেদকে। আব্দুস সোবহান গোলাপকে ৭ দিন রুপা-শাকিল দম্পতিকে ৫ দিনের রিমান্ড দেন আদালত।