সাতক্ষীরায় টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উপকূলের জনজীবন, ভেসে গেছে ক্ষেত খামার ও মৎস্য ঘের
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় বিরাজমান করছে। এর প্রভাবে সাতক্ষীরায় গত তিন দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হচ্ছেন না কেউ। এ ছাড়া অতিবৃষ্টিতে ভেসে গেছে হাজারও মৎস্য ঘের ও পুকুর। বিভিন্ন উপজেলার মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ভেঙ্গে গেছে বেতনা নদীর বাধ। আমন ধানের খেত পানিতে তলিয়ে গেছে।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য বিভাগের সব শেষ তথ্যনুযায়ি — অতিবৃষ্টিতে ভেসে গেছে ৫ হাজারের বেশি মৎস্য ঘের ও ৩ হাজারের বেশি পুকুর। ক্ষয় ক্ষতির পরিমান আরও বাড়তে পারে বলেও জানা গেছে। জোয়ারে নদীতে পানি উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে শ্যামনগর ও আশাশুনির উপকূলের মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে চাপা আতঙ্ক।
এদিকে বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অতিবৃষ্টির কারণে খাল—বিলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সদ্য রোপণ করা আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়লে ধানের খেত টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যাবে বলে মনে করছেন কৃষকেরা। জেলার বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার উপরে জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে স্থানীয়দের।
সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ জুলফিকার আলী রিপন বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গত চব্বিশ ঘন্টায় সাতক্ষীরায় ৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া গত তিনদিনে ২০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। যা চলতি বছরে এ জেলায় সব থেকে বেশি বৃষ্টিপাত। আগামি কাল মঙ্গলবার বিকেল থেকে বৃষ্টিপাত কমবে বলে ধারণা করছে আবহাওয়া অফিস।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড—২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, টানা বৃষ্টিপাতের কারণে যেসব এলাকায় জোয়ার—ভাটার ব্যবস্থা নেই, সেসব এলাকায় দুই থেকে তিন ফুট পরযন্ত পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো বাঁধ বৃষ্টিপাতের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোয়াইব আহম্মেদ বলেন, ইতিমধ্যে জলাবদ্ধতা এলাকা পরিদর্শন করেছি। বেতনা নদীর সমগ্র বাধ কেটে দ্রুত পানি নিষ্কাসনের করে দিয়েছি। এবং যে সমস্ত এলাকায় জলাবদ্ধতায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে সেসব এলাকার মানুষের জন্য শুকনা খাবারের মজুদ রেখেছি।প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহন করবো।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ বলেন, জেলা প্রশাসনের সকল অফিসারদের নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছি জলাবদ্ধতা দুরিকরনের সকল পদক্ষেপ গহন করা প্রয়োজন জন্য।ত্রান মস্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের শুকনা খাবারের ব্যাবস্থা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।