সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা ৫নং কৈখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ ও ভূক্তভোগীরা আজ উপজেলা প্রেসক্লাব চত্ত্বরে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।
সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া এই প্রতিবাদে ইউনিয়নের শত শত মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম বিগত সময় ধরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন দুর্নীতিতে লিপ্ত ছিলেন। প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল বাসার হত্যাকাণ্ডে তার মদদ, সরকারি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ, অনুদান ও কার্ড বিতরণে স্বজনপ্রীতি, সরকারি সম্পদের অপব্যবহার এবং তথ্য সেবায় জনগণকে হয়রানীর মত গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া, ইউনিয়ন পরিষদে রাত্রীকালীন অনৈতিক কর্মকাণ্ডেও তিনি যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগে বলা হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইউনিয়নের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ এবং ভুক্তভোগীরা। তারা বলেন, শেখ আব্দুর রহিম বিগত সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে নিয়মিতভাবে সাধারণ মানুষের অধিকার হরণ করেছেন। সরকারি ঘর বরাদ্দ, পানি সরবরাহের ড্রাম এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক প্রকল্পের নামে তিনি লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে নারীদের উপর যৌন হয়রানি এবং ধর্ষণের মত গুরুতর অভিযোগও ওঠেছে। এসব অভিযোগের কারণে এলাকাবাসীর মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
বক্তারা আরও জানান, ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন কাজে তার অব্যবস্থাপনা এবং স্বজনপ্রীতির কারণে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে, সরকারি অনুদান ও ভিজিএফ কার্ড বিতরণে স্বজনপ্রীতি এবং দুর্নীতির অভিযোগ অনেক পুরনো। চেয়ারম্যান তার ঘনিষ্ঠ লোকজনকে এইসব সুবিধা পাইয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
একজন বক্তা বলেন, শেখ আব্দুর রহিমের অপরাধ এতটাই গভীর যে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আমাদের সমাজের নৈতিক ভিত্তি ধ্বসে যাবে। একজন হত্যাকারী, দুর্নীতিবাজ, এবং নারী নিপীড়নকারীর হাতে ইউনিয়নের দায়িত্ব থাকতে পারে না। আমরা তাকে আর চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চাই না।
বক্তৃতার শেষে উপস্থিত জনতা একযোগে শেখ আব্দুর রহিমের অপসারণ ও তার বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানায়। তারা বলেন, এরূপ একজন দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানকে দায়িত্বে রাখা সম্ভব নয়। শেখ আব্দুর রহিমের মতো একজন অপরাধীকে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা প্রয়োজন, যাতে করে ভবিষ্যতে অন্য কেউ এমন অপরাধ করতে সাহস না পায়।
মানববন্ধন শেষে ইউনিয়নের জনগণ প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। তারা জানায়, যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয়, তাহলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যেতে তারা বাধ্য হবে।