প্রথম রাউন্ডে খেললে বাংলাদেশকে কি সুপার টুয়েলভে দেখা যেত? প্রশ্নটা অনেকেরই। টি ২০ বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে এবার এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন শ্রীলংকারই না ওঠার শঙ্কা জেগেছিল। উঠতে ব্যর্থ হয়েছে দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজও। সরাসরি যখন বাংলাদেশ সুপার টুয়েলভে খেলছে, তখন স্বভাবতই প্রথম রাউন্ড পেরিয়ে আসা দলের চেয়ে কাগজে-কলমে এগিয়ে সাকিব আল হাসানরা। প্রথম রাউন্ড পর্ব পেরিয়ে আসা নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই আজ বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে বাংলাদেশের। টি ২০ বিশ্বকাপের মূল পর্বে বাংলাদেশের রেকর্ড মোটেই ভালো নয়। রোববার সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান জানিয়ে দিলেন, এবার ভিন্ন কিছু করতে চায় বাংলাদেশ। তবে হোবার্টে চোখ রাঙাচ্ছে বৃষ্টি। খেলা পরিত্যক্ত হয়ে গেলে সাকিব আল হাসানের দলই সবচেয়ে বেশি হতাশ হবে। কারণ ডাচদের বিপক্ষেই বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা বেশি। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায়। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি মানে তো শুধু ব্যাট-বল ঝালাই করা বা উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া নয়, আবহাওয়ার সঙ্গে অভ্যস্ত হওয়াও। ক্রাইস্টচার্চে দিন দশেক কাটিয়ে এসে তাই ব্রিসবেন আর হোবার্টের শীতলতাকে স্থানীয়দের মতোই আপন করে নিয়েছেন ক্রিকেটাররা। তবে ব্রিসবেনে যেমন বৃষ্টির কারণে পুরো অনুশীলন করতে পারেনি বাংলাদেশ, হোবার্টে এসে বৃষ্টিয় কবলে দল। সেখানে মাত্র একদিন অনুশীলনের সুযোগ মিলেছে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বিশ্বকাপে ২০১৬ সালে একবারই মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে মাত্র আট রানে জিতেছিল টাইগাররা। এবার বাংলাদেশের বড় প্রত্যাশা নেই। এ বছর মাত্র চারটি টি ২০ ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে দুটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে। সবশেষ নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে চার ম্যাচেই হেরেছে বাংলাদেশ। ব্রিসবেনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে পাত্তাই পায়নি সাকিবরা। লিটন দাস ও সাকিব টানা কয়েক ম্যাচে ভালো করলেও বাকিদের ব্যর্থতায় ত্রিদেশীয় সিরিজের কোনো ম্যাচে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। বিক্ষিপ্তভাবে পারফরম্যান্সগুলো শুধু হারের ব্যবধানই কমিয়েছে।
বোলিং আক্রমণে মোস্তাফিজুর রহমানের কোনো ধার নেই। তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদই ভরসা। তবে ডাচদের বিপক্ষে স্পিন আক্রমণে সুযোগ দেখছে বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডস আবার ভারসাম্যপূর্ণ দল। তিন বিভাগেই তারা দারুণ করছে। বাংলাদেশ অবশ্য তাদের হালকাভাবে নিচ্ছে না। অধিনায়ক সাকিব বলেন, ‘বিশ্বকাপে আমাদের যে পাঁচটা ম্যাচ আছে, তার প্রস্তুতি আমরা নিয়েই এসেছি। এখানে আমরা যার সঙ্গেই খেলি, আমাদের প্রস্তুতি একই থাকবে এবং সেটাই থাকা উচিত। নেদারল্যান্ডস, দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে, ভারত, পাকিস্তান-সব দলের বিপক্ষেই আমাদের প্রস্তুতি একই থাকবে। এতে কোনো পরিবর্তন আসবে না, আমাদের চিন্তাধারায়ও পরিবর্তন আসবে না।’
সাকিবদের বড় সমস্যা ওপেনিং কম্বিনেশন। এখনো ঠিক হয়নি আসলে কারা ওপেন করবেন। সবশেষ ম্যাচগুলোয় শুধু ওলটপালট করে অবস্থা দেখেছেন টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীধরন শ্রীরাম। ওপেনিংয়ে ভালো শুরুটা ফলেও পরিবর্তন এনে দিতে পারে। লিটন দাস ও সৌম্য সরকারকে দিয়ে ওপেন করাতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট। বেলেরিভ ওভারে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং করা দলের গড় ১৫৬।
এদিকে বাংলাদেশকে না হারানোর কোনো কারণই দেখছেন না নেদারল্যান্ডসের অভিজ্ঞ ব্যাটার টম কুপার। তিনি বলেন, ‘আপনারা বলছেন বাংলাদেশ হারলে সেটা অঘটন হবে! কিন্তু আমি সেভাবে দেখছি না। আমরা এখানে লড়াই করতে এসেছি। অতীতে আমরা তাদের বিপক্ষে সমানে সমান খেলেছি। আগামীকাল (আজ) তাদের হারাতে না পারার কোনো কারণ দেখছি না।’