চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের প্রথম টিউবের উদ্বোধন হবে কাল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদিন সকাল ১০টায় ভার্চুয়ালি এ টিউবের উদ্বোধন করবেন।
সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের সচিব মনজুর হোসেন এক চিঠিতে জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের দক্ষিণ টিউবের পূর্ত কাজ শেষ হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসাবে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করবেন।
কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মিত টানেলের দুটি টিউবের অপরটির বাকি কাজও ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে টিউবের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও বৈদ্যুতিক, মেকানিক্যালসহ আরও অনেক কাজ বাকি আছে। এসব কাজ শেষ করে যান চলাচলের জন্য এ টানেল প্রস্তুত হতে আগামী বছর জানুয়ারি পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে টানেল দিয়ে যান চলাচল করতে পারবে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে।
সূত্র জানায়, চলতি মাসে এ টানেলের সামগ্রিক কাজ ৯৮ শতাংশ শেষ হয়েছে বলা যায়। দুটি টিউব তিনটি সংযোগপথের মাধ্যমে যুক্ত থাকবে। এগুলোর খননকাজও শেষ হয়েছে। দুই টিউবের অভ্যন্তরে সড়ক এবং সংযোগ সড়ক ও গোলচত্বরের নির্মাণ কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। চলছে টানেলের ভেতরে বৈদ্যুতিক লাইট স্থাপন, অগ্নিপ্রতিরোধক বোর্ড স্থাপন, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা, পাম্প স্থাপন, টানেলের ভেতরে সাজসজ্জা ও বাতাস চলাচলের জন্য ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা চালুর কাজ।
টানেল প্রকল্পের পরিচালক হারুনুর রশীদ চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি ডিসেম্বরে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই টানেলের কাজ শেষ করার। সরকারের পক্ষ থেকেও তাগাদা ছিল।
জানা গেছে, এ টানেলটি ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হচ্ছে। নদীর তলদেশে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল এটি। কর্ণফুলীর দুই তীরকে সংযুক্ত করে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে টানেল প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। দুই টিউব সংবলিত মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। টানেল টিউবের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার এবং ভেতরের ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার।
২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজ উদ্বোধন করেন। ২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দ্বিতীয় টিউবের কাজ উদ্বোধন করেন। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। ২ শতাংশ হার সুদে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে এ ব্যাংক। বাকি ৪ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা জোগান দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।