মুন্সিগঞ্জ সদর এলাকায় প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে মারধর ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মনির হোসেন সজল (৩৮) নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ সময় ওই শিক্ষার্থীর মা ও বোনকেও মারধর করা হয়।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় মুন্সিগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ গেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম মনির হোসেন সজল। তিনি একটি কোচিং সেন্টারের খন্ডকালীন শিক্ষক। ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী সরকারি হরগঙ্গা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তিনি চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
এঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা আব্দুল আজিজ মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় নারী নির্যাতন আইনে ও শ্লীলতাহানীর অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগে বলা হয়, মঙ্গলবার সিরাজদিখান থেকে ওই শিক্ষার্থী তারে মা ও মামাতো বোনকে সঙ্গে নিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা দিতে সদর উপজেলার সরকারি মহিলা কলেজ কেন্দ্রে আসেন। এসময় কলেজের সামনে তাদের বহনকারী গাড়ির গতিরোধ করেন শিক্ষক মনির হোসেন। পরে গাড়ি থেকে ওই ছাত্রীকে নামিয়ে মারধর করেন এবং তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায় মনির। এ সময় ছাত্রীর মা ও মামাতো বোন বাধা দিলে তাদেরও মারধর করা হয়। এছাড়াও ছাত্রীকে অপহরণের হুমকিও দেয় মনির।
শিক্ষার্থীর মা বলেন, কোচিং সেন্টারে পড়ার সময় শিক্ষক মনিরের সঙ্গে পরিচয় হয় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর। এরপর মনির তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন সময় মনির তাকে রাস্তায় শ্লীলতাহানি করতেন এবং ভয়ভীতি ও তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিতেন। এসব এঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা আব্দুল আজিজ মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় মনিরের বিরুদ্ধে একাধিক সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেছিলেন।
এছাড়াও মনিরের উত্তক্তে ও ভয়ে ভুক্তভোগী পরিবারসহ মুন্সিগঞ্জ সদর থেকে সিরাজদিখান চলে যান। এরপরও শিক্ষক মনির ওই ছাত্রীকে নানাসময় হয়রানি ও শ্লীলতাহানি করেন।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুজ্জামান বলেন, মঙ্গলবার এ ঘটনার পর ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেছেন। এরপর বুধবার অভিযান চালিয়ে মুন্সিগঞ্জের পৌর এলাকা থেকে অভিযুক্ত মনিরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ওসি বলেন, ওই শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন সময়ে শ্লীলতাহানি ও ভয়ভীতি করার অভিযোগে মনির বিরুদ্ধে একাধিক জিডি করেছিলেন শিক্ষার্থীর বাবা। গ্রেপ্তার মনিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।