শ্যামনগর উপজেলার নূরনগরের এক গৃহবধুকে আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নুরনগর গ্রামের সরকার পাড়া খালপাড় এলাকার নিমাই সরকারের মেয়ে তাপসী সরকারের সাথে কয়েক বছর আগে বিবাহ হয় কালিগঞ্জ উপজেলার ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের বাগবাটি জালালতলা গ্রামের বিমল ঢালির ছেলে অশোক ঢালি (৩৫) এর। তাদের দুই বছরের একটি পুত্র সন্তান আছে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ ফেব্রæয়ারি মঙ্গলবার রাত দশটার দিকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী শ্বশুর বিমল ঢালি ও তার স্ত্রী শুধা এর ইন্ধনে ছেলে অশোক ঢালি তার স্ত্রী তাপসীকে ঘরে নিয়ে হাত-পা বেঁধে গায়ে প্রেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। এ সময় গৃহবধূ তাপসীর আত্ম চিৎকারে প্রতিবেশি কয়েকজন ছুটে এসে ঘরের দরজা খুলে আগুন নিভাতে সক্ষম হয়। এর মধ্যেই তাপসীর শরীরে অর্ধেকের বেশি অংশ আগুনে পুড়ে যায়। স্থানীয়রা তাৎক্ষনিক তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঐ সময় স্থানীয়রা গৃহবধূ তাপসীর বাবার বাড়ি শ্যামনগর উপজেলার নুরনগর (খালপাড়) সরকার পাড়া গ্রামের নিমাই সরকারকে জানায়। নিমাই সরকার ঋণের দায়ে ও অভাবের তাড়নায় কাজের তাগিদে যশোরে অবস্থান করছিলেন, মেয়ের এই অবস্থার খবর শুনে তিনি সাতক্ষীরা মেডিকেলে ছুটে আসেন কিন্তু মেয়ের অবস্থার অবনতি হওয়ায় সাতক্ষীরা মেডিকেল থেকে নিয়ে খুলনা মেডিকেলে ভর্তি করেন। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেন কিন্তু অসহায় পিতার কাছে অর্থ না থাকায় মেয়েকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি নুরনগরে আসতে বাধ্য হয় তারা। বর্তমানে তাপসী পোড়া শরীর নিয়ে যন্ত্রনায় চটফট করছে। অন্যদিকে এই প্রতিবেদকের কাছে গৃহবধূ তাপসীর পরিবার জানিয়েছে, ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের বাগবাটি জালাল তলা গ্রামের বিমল ঢালি ও তার ছেলে অশোক ঢালি প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকে বলে তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। এছাড়া গৃহবধূ তাপসী ও তার পরিবারকে বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে মামলা না করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী এই পরিবার। মামলা করলে হত্যা করার মত ঘটনাও ঘটাবে বলে আস্ফালন করে যাচ্ছে অশোক। এই ভয়ে আইনের আশ্রয় নিতে পারছে না ভুক্তভোগী এই পরিবারটি। এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অশোক ঢালির এর আগেও একজন স্ত্রী ছিলো, কিন্তু তাকেও সব সময়ই মারধর করতো বলে জানা গেছে। তাপসীর বাবা অসহায় দিনমুজুর নিমাই সরকার সাংবাদিকদের বলেন আমার মেয়েকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টাকারীর সুষ্ঠ বিচার চাই। এ বিষয়ে কালিগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ মামুন রহমান এর সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ এখনও পাইনি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি অবগত হয়েছি ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলেই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।