”ক্ষতিপূরনের অঙ্গীকার জলবায়ুর সুবিচার”স্লোগানকে সামনে রেখে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে যুব সাইকেল র্যালি অনুষ্টিত হয়েছে। (২২ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় ইশ্বরীপুর ইউনিয়নের আজাদ মঞ্চ থেকে শ্যামনগর প্রেসক্লাব পর্যন্ত যুব সাইকেল র্যা লীটি কর্মসূচিটি বেসরকারী উন্নয়ন গবেষনা প্রতিষ্টান বারসিকের সহযোগিতায় আয়োজন করে সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিম ও সিডিও।
সাইকেল র্যালি কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলের তরুণরা ‘উপকূল বাঁচাতে টেকসই বেড়িবাঁধচাই, বেঁচে থাকার অধিকার, চাই জলবায়ু সুবিচার ‘কার্বন নিঃসরণ হ্রাস করি, Save earth for future, Action For Loss And Damage Funds And Climate Change, কাবন নিঃসরন কম করি,পৃথিবীকে রক্ষা করি, ‘আমাদের কান্না আপনারা কি শুনতে পান না, Young people for Climate action now, Don’t increase carbon footprint,উপকূলের ভারসাম্য রক্ষা করি,খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করি , ক্ষতিপূরনের অঙ্গীকার জলবায়ুর সুবিচার সহ নানা স্লোগান সম্বলিত প্লাকার্ড প্রদর্শনের মাধ্যমে জলবায়ু সুবিচারের দাবি জানায় ।
এসময় বক্তব্য রাখেন শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি জি এম আকবর কবীর, জনসংগঠন সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ সিরাজুল ইসলাম, সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিমের স্বেচ্ছাসেবক সাইদুল ইসলাম, সিডিও ইয়ুথ টিমের স্বেচ্ছাসেবক হাফিজুর রহমান, বারসিকের রামকৃষ্ণ জোয়ারদার প্রমুখ।এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বারসিকের কর্মকর্তা বৃন্দ।
শ্যামনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি জি এম আকবর কবীর বলেন, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে নদীর গভীরতা কমে যাচ্ছে যার ফলে আমাদের ভেড়িবাধ গুলো ভেঙে লোকালয়ে লবণ পানি ঢুকে মানুষের জীবন যাপন নষ্ট করে দিচ্ছে। আমাদের উপকূলীয় এলাকায় টেকসই ভেড়িবাধ তৈরি করতে হবে যার তলা হবে100 ফুট উঁচু হবে 20 ফুট যুবরা আমাদের শক্তি উন্নত দেশ আরাম-আয়েশে থাকবে তা হবে না। আমাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে । ইদুর বিড়াল খেলা বন্ধ করতে হবে। প্রতিবছর নদীর ভেড়িবাঁধ ভেঙে উপকূলীয় এলাকার মানুষ সর্বশান্ত হচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ মোটেও দায়ী নই। সিডর, আইলা বুলবুল, আমফান, মহাসেন, নার্গিস, ইয়াশ, ফণী, কোমেন, রোয়ানু,সিত্রাংসহ বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া ঘূর্নিঝড় ও জলোচ্ছাসের কারণে এই অঞ্চলের মানুষের জীবন জীবিকা বারবার ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। একই সাথে সমুদ্র পানির উচ্চতা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আমাদের উপকূলীয় এলাকার ভেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে পানি ঢুকে আমাদের কৃষি জমিকে লবনাক্ত করে ফেলেছে। ফলে এই অঞ্চলের কৃষি ভিত্তিক জীবন জীবিকা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য যে লস এবং ড্যামেজ হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ পাওয়া আমাদের ন্যায়সংগত অধিকার। উপকূলীয় অঞ্চলের ভেড়িবাঁধগুলো সংস্কার ও টেকসই ভাবে বাঁধ তৈরী হলে উপকূলীয় এলাকায় মানুষ বসবাস করতে পারবে। আমরা জলবায়ু সুবিচার চাই ,সুস্থভাবে বাঁচতে চাই। এজন্য জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে।
যুব সাইকেল র্যা লীটি শ্যামনগর প্রেস ক্লাবের সামনে এসে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন এবং জলবায়ু সুবিচারের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন ।
এর আগে সুন্দরবন স্টুডেন্ট সলিডারিটি টিম ও সিডিও টিমের সদস্যরা ইশ্বরীপুর ইউনিয়নের আজাদ মঞ্চ থেকে যুব সাইকেল র্যা লী শুরু করে শ্যামনগর সদরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন এবং জলবায়ু সুবিচারের দাবী জানান।
উপকূলীয় অঞ্চলের জনগোষ্ঠির দাবীসমূহঃ
১.উপকূলীয় এলাকায় টেকসই ভেড়িবাঁধ তৈরীতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন।
২.জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্য দায়ী ধনী দেশগুলোর নিকট থেকে জলবাযুর ক্ষতিপূরণ আদায় করা।
৩.জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে স্থানীয় জনগনের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো।
৫.সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা।
৬.জলবায়ু নায্যতা, দ্বন্দ্ব সংঘাতের রুপান্তর ঘটানো ও জেন্ডার নায্যতা নিশ্চিত করা।