রাজধানীর সচিবালয় এলাকায় আনসার সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ চলাকালে গুরুতর আহত হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
আজ রবিবার রাত ১১টার দিকে সচিবালয়ে অবস্থান করা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক সারজিস আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায়, হাসপাতালে নেয়ার সময় জ্ঞান ছিল না হাসনাতের। তবে ভর্তি করার পর জ্ঞান ফিরে তার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সকাল থেকে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন হাজারো আনসার সদস্য। একপর্যায়ে দুপুর ১২টা থেকে তারা সচিবালয়কে অবরুদ্ধ করে রাখে। এতে সবগুলো গেট বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল ৫টায় অফিস ছুটি হলেও রাত সাড়ে ১০টার আগে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বের হতে পারেননি।
বিকেলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী আনসারদের সব দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি তিনি বাহিনীর সদস্যদের ‘রেস্ট প্রথা’ বাতিলেরও ঘোষণা দেন। সে সময় আনসারদের আন্দোলনের সমন্বয়ক নাসির কর্মসূচি স্থগিত করেন।
কিন্তু আন্দোলনকারীদের একটি দল চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা দেয়ার দাবিতে সচিবালয় ঘিরে রেখে উপদেষ্টা ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে। রাতে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দেয়াল টপকে সচিবালয় ছাড়তেও দেখা যায়।
রাত ৯টার আগে ফেসবুক লাইভে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত শিক্ষার্থীদের সচিবালয়ে আসার আহ্বান জানান। পরে রাত ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হয়ে সচিবালয় অভিমুখে রওনা হন। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে সচিবালয়ের সামনে শিক্ষার্থীরা পৌঁছালে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
প্রায় আধা ঘণ্টা পর্যন্ত সচিবালয় এলাকায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। এ সময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ পাওয়া যায়।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাধারণ জনতাও লাঠি হাতে নেমে পড়েন। ছাত্র-জনতার ধাওয়া খেয়ে সচিবালয় এলাকা ছেড়ে যান আনসার সদস্যরা। পালানোর সময় লাঠি দিয়ে আনসার সদস্যদের পিটিয়েছেন ছাত্র-জনতা। পরে সেনাবাহিনী সচিবালয় এলাকায় অবস্থান নিলে পরিবেশ শান্ত হয়। প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টা পর সচিবালয়ে অবরুদ্ধ উপদেষ্টা এবং কর্মীরা মুক্ত হন।